বড় লোকের মেয়ে যখন রিকশাওয়লার প্রেমে (২য় পর্ব)
লেখক: SMsudipBD About 2020s ago |
(বড় লোকের মেয়ে যখন রিকশাওয়লার প্রেমে)
(১ম পর্ব কমেন্টবক্সে লিংক দেওয়া আছে)
(২য় পর্ব)
- এই রিকশা নিলয় এদিকে আয়......!
আমি ভাবলাম আমি রিকশা চালায় এটা অন্য মানুষ কি করে যানে। পরে খেয়াল করে দেখলাম নিলা ডাকছে,
আমি তার কাছে যেতেই সে বল্লো,
-কি রে রিকশাওয়ালা এইখানে ভাড়া চাইতে আসছিস নাকি।(নিলা)
-কি বলিস দোস্ত এই রিকশাওয়ালা। (পাশে থেকে নিলার বান্ধবী)
-আর বলিশ না দোস্ত, আজ দিন টায় খারাপ।এই ভিক্ষুকের রিকশায় উঠছিলাম আজ।ঠিক মতো ভাড়া দিইনি বলে, এখানে চলে আসছে মনেহয়।(নিলা বলেই হেসে উঠলো)
আমি সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম।কিন্তু পিছন থেকে নিলা আবার ডাক দিলো,
-এই ভিক্ষুকের বাচ্চা, টাকা নিবি না।(এই বলে আমার দিকে একটা পাচ টাকার নোট ছুড়ে দিলো)
-কিরে দোস্ত এর রিকশার ভাড়া মাত্র পাচ টাকা।(নিলার বান্ধবী বলেই খুব হেসে উঠলো)
আমি সেখানে আর না দাঁড়িয়ে কলেজ থেকে বের হলাম।আমি তাদের কিছুই বলতে পারলাম না।কিই বা বলবো আমি!
আমাকে যে এগুলো সহ্য করতে হবে। কারন আল্লাহ যে আমাকে এইভাবেই সৃষ্টি করেছেন। বানিয়েছেন গরীব। আর গরীবরা তো বড়লোকদের খেলনার পুতুল। তাদের যখন যা মন চায়, তারা তায় করে।
এগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যেন চোখের কোনা দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়েছে, খেয়ালই করি নি।এদিকে বাসাতেও চলে এসেছি।
-কিরে বাবা এসেছিস।(মা)
-হ্যা, মা এইতো আসলাম।নিঝুম কোথায় (আমার ছোট বোন)।
-জানি না, দেখ কোথায় খেলতে গেছে। বাবা একটা কথা বলি? (মা)
-হ্যা বলো, ছেলে সাথে কথা বলতে মায়ের কি অনুমতি লাগে!(আমি)
-বাবা বাড়িওয়ালা এসেছিলো,ভাড়ার টাকা চায়তে। তোর কাছে কি টাকা হবে! (মা)
-মা, কখন আসছিলেন আন্টি? (আমি)
-এইতো সকালে। (মা)
-ওহ, আচ্ছা তুমি বইলো দুইদিন পরে দিয়ে দিবো। (আমি)
তারপর হাত মুখ ধুয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমাতে গেলাম একটু। কিন্তু চিন্তায় আর ঘুম আসে না। আজ রাতে অনেক ভাড়া মারতে হবে। বাসা ভাড়া চার হাজার টাকা, আমার কাছে টিউশনির আছে ৩৫০০ টাকা।আরো পাঁচশ টাকা। কি করে জোগাড় করি। আমার মা জানে না আমি রিকশা চালায়।মা জানে আমি রাতে কয়েকটা টিউশনি করি।এগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যেন ঘুমিয়ে গেলাম একটু।
বিকেলে ঘুম থেকে উঠে টিউশনি করতে গেলাম।এখন তিনটা টিউশনি করতে হবে।
মাগরিব এর সময় টিউশনি শেষ করে নামাজ পড়ে রিকশা নিয়ে বের হলাম। কিন্তু আজ কোন ভাড়ায় যে হচ্ছে না। অবশেষে একজন ভদ্র লোক ডাক দিলেন,
-এই রিকশা যাবে?(ভদ্রলোক)
-জি স্যার, কোথায় যাবেন।(আমি)
-অমুক এলার ৪ নাম্বার রোড ৩১২ নাম্বার বাড়ি। (ভদ্রলোক)
-জি স্যার উঠেন।(আমি)
তারপর ভদ্রলোক উঠলেন।আমিও আল্লার নাম নিয়ে চলতে থাকলাম। ভদ্রলোক পিছন থেকে বললেন,
-বাবা তুমি কোথায় থাকি?(ভদ্রলোক)
-এইতো স্যার,অমুক এলাকায় ১২নাম্বার বাড়ি।(আমি)
-তা বাবা তুমি পড়া লেখা করো না? (ভদ্রলোক)
-স্যার গরীবের আবার পড়া লেখা।(আমি)
-আসলে তুমি অনেক সুন্দর করে কথা বলো তো, তাই জিজ্ঞেস করলাম।(ভদ্রলোক)
গল্প করতে করতে ঠিকানায় চলে আসলাম।স্যার চলে এসেছি।
-বাবা ভাড়া কতো দিবো? (ভদ্রলোক)
-স্যার, ১৫ টাকা। (আমি)
-এই নাও।
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।তারপর আবার অন্য ভাড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।কিন্তু কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম আমার রিকশায় কালো একটা ব্যাগ। তখন চিন্তায় পড়ে গেলাম, এইটা কার ব্যাগ। আমার রিকশায় তো অই ভদ্রলোক ছাড়া কেও উঠেনি। তাহলে উনারই হবে এইটা। এটার মধ্যে হয়তো অনেক দরকারী জিনিশ আছে। তাই আমি আবার ভদ্রলোক এর বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।
ভদ্রলোক এর বাসায় গিয়ে কলিংবেল দিতেই আমার চোখ কপালে,
এইতো দেখি নিলা।সে এখানে কি করছে।সে এখানে কেন। এমন সময় নিলা বলে উঠলো,
-কিরে ভিক্ষুকের বাচ্চা, এখানে কি।আমার বাসা চিনলি কিভাবে।(নিলা)
-না মানে আসলে...........(আমি)
কে এসেছে রে মা (ভেতর থেকে ভদ্রলোক টি জিজ্ঞেস করতে করতে বের হলো)
-স্যার আমি। এই ব্যাগ টা আমার রিকশায় রেখে আসছিলেন।(আমি)
-বাবা তুমি নিয়ে আসছো এইটা। আমার তো মনেই ছিলো না এই ব্যাগের কথা। তুমি যানো এর মধ্যে কি আছে?(ভদ্রলোক)
-জি না স্যার। আমি কিভাবে জানবো। (আমি)
-বাবা এটার মধ্যে ৫০,০০০০০ টাকা আছে।এটা কালকেই জমা দিতে হবে একটা একাউন্ট এ।(ভদ্রলোক)
-জি স্যার নেন। আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমাকে অন্য ভাড়া মারতে হবে।(আমি)
-তা কি কথা, তুমি আমার এতো বড় উপকার করলে চা বা কফি না খেয়েই চলে যাবে।(ভদ্রলোক)
-না স্যার থাক আজ যায় অন্যদিন হবে।(বলেই পিছনে যেতেই, স্যার আবার ডাকদিলো)
-এই ছেলে এদিকে আসো।
এই নাও । (একহাজার টাকার কিছু নোট বাড়িয়ে দিয়ে)
-না স্যার থাক, (আমি)
-না এটা নাও। (ভদ্রলোক)
আমি এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিলাম।আর নিলার দিকে তাকালাম।কেমন যেন রাগে ফুলছে। নিলা রাগলে দেখতে অনেক সুন্দর দেখায়।একটু পর ভদ্র লোক টি বল্লো,
-বাবা তোমার নাম টায় তো জানা হলো না।(ভদ্রলোক)
-স্যার আমার নাম নিলয়।(আমি)
-ওহ, আর ও হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে নিলা।(ভদ্রলোক)
তখন বুঝলাম এইটা নিলাদের বাসা। আর উনি নিলার আব্বু।
তারপর নিলার আব্বুর থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
পরেরদিন কলেজে,
কলেজে ঢুকেই নিলার কন্ঠ,
-দোস্ত বুঝলি আজকাল কিছু রিকশাওয়ালা...........
চলবে......!
বড়লোকের মেয়ে যখন রিকশাওয়ালার প্রেমে..!
খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্বগুলো পেতে Add বা flow করুন।
(ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়)
Tag: othersdiscusionlife storyall poemsharelove storylife storywapkiz codetutorial tag codetutorial tag code
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা জানাতে একদম ভুলবেন না !
মন্তব্য 0 টি আছে।
Need Login or Sing Up
কোন মন্তব্য নেই।