[Love Story ] একটি বৃষ্টিভেজা রাত (season 2) শেষ পর্ব
লেখক: admin About 2020s ago |
একটি বৃষ্টিভেজা রাত (season 2)
শেষ পর্ব
#Neer_Nilavro
নীলাম্বরীর চিন্তায় চিন্তায় আমার নিজের ই করুণ অবস্থা!
কিভাবে কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।তাই বাধ্য হয়েই ওর বাসার উদ্দেশ্যে বের হলাম।আমার বাসায় কিছুই জানাই নি।নীলাম্বরী কে নিয়ে সোজা বাসায় এসে উঠবো।তারপর যা হবার হবে!
একদিকে আমার ও চাকরী নেই,অন্যদিকে হাতে টাকাও সেরকম নেই। কোথাও পালিয়ে যেতেও টাকার প্রয়োজন, বিয়ে পড়াতেও টাকার দরকার।কি যে করি?
অবশেষে ওর বাসার সামনে পৌছে গেলাম।ঠিকানা জানা ছিলো।খুঁজতে খুঁজতে এসে পড়েছি।নীলাম্বরী বাসায় আছে কিনা তাও জানিনা আমি।ওকে খুব মিস করছি।গত পাঁচদিন যাবত আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।জানিনা ওকে বাসায় পাবো কিনা? যদি বিয়ে হয়ে যায়?
ভাবতেই টেনশন বেড়ে গেলো আমার।ওকে ছাড়া তো আমি বাঁচতেই পারবো না।নীলাম্বরী আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজ! তোমার নীলাভ্র এসে গেছে তোমার কাছে।
ভয়ে ভয়ে বাসার কলিং বেল টিপলাম।অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম কিন্তু কেউ এলোনা।আবারো কলিংবেল চাপতেই একজন লোক এসে দরজা খুলে দিলো।আমি তাকে বললাম, বাসায় নীলাম্বরী আছে?
লোকটা কি যেন ভেবে কর্কশ গলায় বলল,না।
বলেই দরজা লাগিয়ে দিলো দড়াম করে।আমার কষ্টে বুক ফেটে যেতে চাইছে।কি করবো এখন আমি? ওকে ছাড়া বাঁঁচবো কিভাবে? এ জীবন যে নীলাম্বরী কে ছাড়া শূন্য।শুধুমাত্র প্রেমিক ই জানে,প্রেম হীন হয়ে বাঁচার কি যন্ত্রণা! আর নীলাম্বরী তো আমার সবকিছু।ওকে ছাড়া এই নীলাভ্র বেঁচে থেকেই বা কি করবে?
আস্তে আস্তে হেটে বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালাম।অনেক্ষণ দাড়িয়েই রইলাম।জানালা দিয়ে যদি নীলাম্বরী একবার আমাকে দেখতে পায়।তবে খুব ভালো হতো! কিন্তু সেরকম কোনো লক্ষণ পাওয়া গেলো না।নীলাম্বরী র কোনো।খোজ খবর ই পেলাম না।
.
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত।ওর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি।সেই সকাল থেকে।সারাদিন কিছুই খাইনি।ক্ষুধায় পেট জ্বালা করছে।কিন্তু খাওয়ার মানসিকতা নেই।আমার নীলাম্বরী ওই বাড়িতেই আছে,আমি নিশ্চিত।নয়ত ওভাবে দরজা লাগিয়ে দিলো কেন?
সন্ধ্যা পেড়িয়ে যাচ্ছে প্রায়।একটু বাদেই রাত নামবে।কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
রাস্তা দিয়ে একটা মেয়ে যাচ্ছিলো।বয়স ষোলো সতের হবে।ওকে ডেকে বললাম, এই বাড়িতে নীলাম্বরী থাকে?
- হ্যা।
-একটা উপকার করবে আমাদের?
মেয়েটা হয়ত বুঝতে পেরেছে ব্যাপার টা।বলল,কি উপকার?
- ওকে গিয়ে বলবে, #নীলাভ্র দাঁড়িয়ে আছে বাসার সামনে।একবার এসে যেন দেখা করে।
- আচ্ছা।
মেয়েটি বাড়ির ভিতরে ঢুকলো।আমি মনেপ্রাণে নীলাম্বরীকে দেখতে চাইছি একবার, শুধু একটি বার।কিন্তু সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।নীলাম্বরী এলোনা।অনেক্ষণ পর সেই লোকটা বের হয়ে আসলো।এই লোকটা আমার দিকেই আসছে।আমার কথা জানতে পেরেছে বোধহয়।এখানে আর এভাবে থাকা যাবেনা।এখনি চলে যেতে হবে।আমি কোনোদিকে না তাকিয়েই একটা দৌড় শুরু করলাম। লোকটিও দৌড়াচ্ছে আমার পিছনে।
আমি জোর দৌড় লাগালাম।আর আমাকে পায় কিভাবে? দৌড়ে এসে একটা বাড়ির গলিতে ঢুকে পড়লাম।অনেক্ষণ পর লোকটি ফিরে গেলে বের হয়ে আসলাম।এখন এখানে থাকাও নিরাপদ না।ধরতে পেলে মারধোর করবে শিওর। তাহলে ফিরে যাবো? কিন্তু নীলাম্বরী কে ছেড়ে যাবো কিভাবে?
অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম সেখানে।রাত হয়ে এসেছে।এবার তো চলে যেতেই হবে মনে হচ্ছে।সেই মুহুর্তে আমার নাম্বারে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো।রিসিভ করতেই শুনতে পেলাম,তুমি কোথায় আছো?
নীলাম্বরী! এতদিন পর ওর কণ্ঠ শুনতে পেয়ে আমার আত্মা যেন স্বস্তি ফিরে পেলো।কথা বলার শক্তিই হারিয়ে ফেলেছি।নীলাম্বরী বলল,এই কথা বলছ না কেন? তুমি কোথায়?
- তোমার বাসার সামনে, ডান দিকের গলিটায়।
- একটু এগিয়ে গিয়ে একটা লিচুর বাগান পাবে।সেখানে থাকো আমি আসছি।
কল কেটে যেতেই আমার দেহ প্রাণ ফিরে পেলো। নীলাম্বরী আসছে! এরচেয়ে সুখের বিষয় আর কি হতে পারে? অবশেষে আমার নীলাম্বরী আসছে আমার কাছে? কতদিন দেখিনা ওকে!
.
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখতে পেলাম নীলাম্বরী আসছে।আমার আনন্দের সীমা রইলো না।বাগানের ভিতরের দিকে ঢুকে পড়লাম।রাত হয়ে গেছে অনেক আগেই।নীলাম্বরী এসেই আমার দিকে না তাকিয়েই বলল,আগে চলো এখান থেকে।এখানে থাকাটা নিরাপদ নয়।আগে পালাই পরে সবকিছু।
আমিও প্রস্তুত ছিলাম।বললাম, চলো।
একটা অটোতে উঠে সোজা বাস স্ট্যান্ডে চলে আসলাম।তারপর বাসে উঠে পড়লাম।
বাস ছেড়ে দিলো।এতক্ষণে নীলাম্বরী আমার দিকে তাকিয়ে বলল,নীলাভ্র। কতদিন পর দেখা! মনে হচ্ছে যেন হাজার বছর কথা হয়নি!
- হুম নীলাম্বরী। কেমন আছো তুমি?
এরপর নীলাম্বরী যা যা বলল,শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম।ওর বাসায় আমার ব্যাপার টা নিয়ে রোজ ওকে মারধোর করতো। ওর মোবাইল নিয়ে রেখে দিয়েছে,ওকে ঘর থেকে বের হতে দেয়না।তখন ওই মেয়েটা যাওয়ার পর ওকে খবর দেয়ামাত্রই ওর ছোটমা শুনে ফেলেছে।তাই ওকে আবারো ভালো করে দরজায় তালা দিয়ে রেখেছিলো।আর আমাকে মারার জন্য ওর আব্বু বেড়িয়ে এসেছিল।আমার এটা ভেবে শান্তি লাগছে যে,নীলাম্বরীকে এই জেলখানা থেকে মুক্ত করতে পারলাম!
.
[IMG]https://dl4.wapkizfile.info/ddl/c1b07deedbe93eefbc16b6fc466ea70f/smsudipbd+wapkiz+mobi/8-(smsudipbd.wapkiz.mobi).jpg[/IMG]
বাসে জানালা দিয়ে সুন্দর বাতাস আসছে।নীলাম্বরী আমার কাঁধে মাথা রাখলো।আমি ওর হাত শক্ত করে ধরলাম।নীলাম্বরী ও আমার হাত চেপে ধরলো শক্ত করে।তারপর বলল,আমার সব কষ্ট শেষ নীলাভ্র।
- এতদিন তোমার সাথে কথা বলতে না পেরে আমিতো মরতে বসেছিলাম।
- আমিও গো।খাওয়া নেই,ঘুম নেই,সবসময় শুধু তোমার ই চিন্তায় পাগল হয়ে ছিলাম।তুমি আজ আমায় বাঁচালে নীলাভ্র।
- আমিও যে বাঁচলাম নতুন করে।
- এখন আমরা কোথায় গিয়ে উঠবো?
- বাসায়।
- তোমার বাসায় সমস্যা হবেনা?
- আশাকরি হবেনা।আর হলেও ভয় নেই।তোমাকে নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে আসবো।যা হবার হবে,দেখা যাক।
নীলাম্বরী আরো শক্ত করে চেপে ধরলো আমার হাত।আমার কাঁধে মাথা রেখে আস্তে আস্তে আমার বুকের কাছে চলে গেলো। দুহাতে শক্ত করে ধরে রইলো আমায়।আমি বুঝতে পারছি নীলাম্বরী কাঁদছে। কাঁদুক,কান্নার জলে ওর সব কষ্ট দূর হয়ে যাক।
বাসায় আসার পর আর কোনো সমস্যাই হলোনা।আমার মা বরং দারুণ খুশি হলো নীলাম্বরী কে দেখে।সব শুনে আম্মুই বাসার সবাইকে বুঝিয়ে বলল।
সন্ধ্যাতেই কাজী এসে আমাদের বিয়ে পড়িয়ে দিলেন। আর কোনো ভয় নীলাম্বরী কে হারানোর।
.
বাসর ঘরে ঢুকে দেখি বউটি আমার বিছানায় পা তুলে বসে আছে।
আমি গিয়ে ওকে অনেক্ষণ ধরে দেখলাম।তারপর বুকে জড়ি
.jpg)
Tag: othersdiscusionlife storyall poemsharelove storylife storywapkiz codetutorial tag codetutorial tag code
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা জানাতে একদম ভুলবেন না !
মন্তব্য 0 টি আছে।
Need Login or Sing Up
কোন মন্তব্য নেই।