[Love story] একটি বৃষ্টিভেজা রাত (season 2) পর্ব ৩
লেখক: SMsudipBD About 2020s ago |
#Neer_Nilavro
নীলাম্বরী আমাকে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে দিচ্ছে আর আমি বাদাম খাচ্ছি।ওকে ও খাইয়ে দিচ্ছি মাঝেমাঝে।
ও বলল,আচ্ছা নীলাভ্র একটা কথার উত্তর জানো?
- কি?
- ভালোবাসা হয়ে যাওয়ার পর কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে কেন?
প্রশ্ন শুনে আমি হাসলাম।কিজানি এর উত্তর যে কি হবে! বললাম,এটাও ভালোবাসার একটা অংশ বলে।
- সত্যি!
- হ্যা।কেন তোমার কি কাছে পেতে ইচ্ছে করে নাকি?
নীলাম্বরী ভয়ানক ক্ষেপে গিয়ে আমাকে মারতে আরম্ভ করে দিলো।আমি শব্দ করে হাসতে লাগলাম।বেশ মজা হচ্ছে আজ।নীলাম্বরী কে রাগাতে অনেক ভালোই লাগে দেখছি! ইচ্ছে করছে আরও বেশি করে রাগাই।বললাম,খুব ইচ্ছে করে?
- ছিঃ,তুমি বড্ড পাজি।
- কথাটা তুমিই তুলেছো বাবু।
বলেই আবারো হাসতে লাগলাম। নীলাম্বরী আমার হাসি দেখে রেগে যাচ্ছে।আমি ওকে আরেক টু ক্ষেপানোর জন্য বললাম,এতদূর?
ও এবারে দাত কিড়মিড় করতে লাগলো।আমার বড্ড হাসি পাচ্ছে।হাসতে হাসতেই ওর হাতটা চেপে ধরলাম।অনেক্ষণ চুপ করে রইলাম এরপর।
নীলাম্বরী বকবক করেই যাচ্ছে আর আমি শুনছি।ওর প্রত্যেকটা কথাই যেন কত ভালবাসা মেশানো। শুধু শুনতেই ইচ্ছে করছে।আমি অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে আছি আর ও কথা বলেই যাচ্ছে।.
.
পার্ক থেকে বেড়িয়ে আসলাম তাড়াতাড়ি।পার্কের ভিতর অনেক কোলাহল।পাশেই একটা জমিদার বাড়ি আছে।সেখানে কিছুক্ষণ বসে আড্ডা দেয়া যাবে।অনেক শান্ত ওর নির্জন জায়গা সেখানে।
জমিদার বাড়িতে ঢোকার আগেই দুজনে খাবার খেয়ে নিলাম।খেতে খেতে ৫ টা বেজে গেলো।ছয় টায় জমিদার বাড়ীর গেট বন্ধ করে দেয়া হবে।ওখান থেকে বেড়িয়ে নীলাম্বরী কে বাসে তুলে দিবো।
চিন্তা ভাবনা করেই জমিদার বাড়িতে গেলাম।দুজনে শান বাধানো পুকুরের পাশে বসে গল্প করলাম, হাত ধরে হাটলাম।জমিদার বাড়ির করিডোরে পা ঝুলিয়ে বসে গল্প করলাম।গান গাইলাম,হাসাহাসি করলাম।খুবই ভালো সময় পার করলাম দুজনে।
কিন্তু সন্ধ্যের আগ মুহুর্তেই হঠাৎ আকাশ মেঘলা হয়ে আসল।মুহুর্তের মধ্যেই শুরু হয়ে গেলো বাতাস।আমরা ভাবলাম ঝড় বৃষ্টি থামলে বেড়িয়ে পড়ব।তাই ম্যানেজার কে বলে গেস্ট হাউজে এসে আশ্রয় নিতে হলো।সন্ধ্যে পেড়িয়ে রাত নেমেছে।
আমরা দুজনে গেস্ট হাউজের একটা রুমে বসে আছি।বাইরে তুমুল ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে।এই ঝড়ের মধ্যে কোথাও বের হওয়ার উপায় নেই।আমার মনে পড়ে গেলো সেই রাতের কথা। সেদিন নীলাম্বরী এমন ঝড়ের মধ্যেই ছুটতে ছুটতে আমার দ্বারে এসে হাজির হয়েছিল।আজও সেরকম ঝড় বইছে।
নীলাম্বরী খুশি খুশি গলায় বলল,আজ যদি ঝড় আর না থামে খুব ভালো হবে।
- কেন?
- আমরা এখানেই রাতটা কাটিয়ে দিবো।
কথাটা শুনে আমি চমকে উঠে তাকালাম ওর দিকে।সে চোখের ভাষা অনেক কঠিন।অনেক কিছুই বোঝাতে চাইছে ওর দৃষ্টি! এখানে রাতটা কাটিয়ে দিতে পারলে বেশ হতো।দুজন আবারো একটা বৃষ্টিভেজা রাত একসাথে কাটাতে পারতাম।কিন্তু আজ দুই রাতের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য।সেদিনের বৃষ্টির রাতে আমরা দুজন দুজনের অচেনা ছিলাম,আর আজ আমরা একে অপরকে প্রচণ্ড ভাবে ভালোবাসি!
[IMG]https://smsudipbd.wapkiz.mobi/download/dl4/9c57a0fd0bbb0123857ef58479c02ec0/smsudipbd+wapkiz+mobi/2-(smsudipbd.wapkiz.mobi).jpg[/IMG]
বৃষ্টি বেড়েই চলেছে।ম্যানেজার আমাদের কে চাবি দিয়ে সেই যে চলে গেলো আর ফিরে আসেনি।এই পুরো গেস্ট হাউজে বোধহয় এখন আমরাই দুজন মানুষ।এমন ঝড় বৃষ্টি দেখে ম্যানেজার সাহেব নিশ্চয় ই আসার সাহস পান নি।
.
ঘরে একটা চার্জার লাইট জ্বলছে।সেই টিমটিমে আলোয় আমি নীলাম্বরী কে দেখছি।রাত নেমেছে অনেক আগেই।কিন্তু বর্ষণ থামার কোনো লক্ষণ ই নেই।নীলাম্বরী বলল,আজ বৃষ্টি থামলেও ও আর যেতে চায়না।আজকের রাতটা এখানেই কাটিয়ে দিতে চায়।
আমিও না করতে পারছি না।ওর সাথে সারারাত বসে গল্প করার আনন্দ উপভোগ করেছি আমি।সেই মায়াময় লোভনীয় রাতটার কথা এখনো ভুলতে পারিনা আমি।বারবার স্মৃতিতে এসে ধরা দেয়।সেই প্রিয়তমা কে এমন একটা বৃষ্টির রাতে কাছে পেয়েও কি করে যেতে দেই?
নীলাম্বরী বিছানার উপর বসে আছে।আমি এগিয়ে গিয়ে ওর পাশে বসলাম।চোখাচোখি হতেই আমার বুকের ধুকপুকুনি টা বেড়ে যেতে লাগলো।এই দৃষ্টির দারা ঘায়েল হয়েছিলাম আরো একবার।
আমি অজান্তেই এগিয়ে গেলাম ওর কাছে।নিমেষেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ঠোট ওর ঠোট স্পর্শ করে ফেললো!
এ এক অন্যরকম ভালোবাসার স্বাদ! চোখ বন্ধ করে রইলাম আমি।এতটা ভালোলাগা অনুভব করছি যা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না।হৃদয়ে তোলপাড়,মনের ভিতরে ঝড় শুরু হয়ে গেছে।আমি আরামে চোখ বুজে আছি।ওর মিষ্টি ঠোট দুটো আমার ঠোটের ভিতরে চলে এসেছে!
.
অনেক্ষণ এভাবে কেটে গেলো।আমি অজানা এক ঘোরের মধ্যে চলে গেছি।ঠোট ছাড়িয়ে নেয়ার সাহস আমার হলোনা।অনেক্ষণ পর নীলাম্বরী ছাড়িয়ে নিয়ে অন্যদিকে তাকালো।আবছা আলোয় দেখতে পেলাম ও একদম লাল হয়ে উঠেছে লজ্জায়।
আমিও খুব লজ্জা পাচ্ছি।কি বলবো বুঝতে পারছিনা।বুকের ভিতর হার্টবিট এত জোরে হচ্ছে যে,ঝড়ের শব্দ না থাকলে নীলাম্বরী সে শব্দ শুনতে পেতো। অবশ্য বাইরের ঝড়ের চেয়ে ভিতরের ঝড়টাই বেশি প্রবল হয়ে উঠছে।নারীর নেশা এত মধুর হতে পারে আমি ভাবতেও পারিনি।
.
নীলাম্বরী বললো,এভাবে কি দেখছো?
- তোমাকে দেখছি।এত মিষ্টি কেন তুমি!
- তুমি ভালোবাসো বলে।
- সকালবেলাতেও আমি ভাবিনি আজ আবার এভাবে বৃষ্টির কবলে পড়তে হবে।এত সুন্দর একটা রাত আবারো আমাদের জীবনে আসবে কল্পনাই করিনি।
নীলাম্বরী লজ্জা পেয়ে বলল,আমিও ভাবিনি।যদিও মনে মনে সবসময় ই চেয়েছি ওরকম একটা সুন্দর রাত যেন আবারো একবার তোমার সাথে কাটাতে পারি।
- আমাদের বিয়ে হবে বর্ষাকালে।তারপর পুরোটা বর্ষা জুরে আমরা এভাবে উপভোগ করবো রাতটাকে।সেই প্রথম রাতের মত।
- আচ্ছা, আমরা বিয়ে করবো কবে?
- কোনো এক বর্ষায়।
- সেটা কতদিন বাকি আরও? তোমার থেকে দূরে দূরে থাকতে মোটেও ভালো লাগেনা আমার।
আমি একটু ভাবলাম বিষয় টা নিয়ে।আমারও ওকে দূরে রাখতে ইচ্ছে করেনা।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা চাকরীর ব্যবস্থা করে ওকে আমার কাছে নিয়ে আসতে হবে।
নীলাম্বরী আমার হাত শক্ত করে ধরে বলল,আমাদের সুন্দর একটা বাড়ি হবে।আর ছোট্ট একটা ঘর।সেই ঘর ভরে থাকবে শুধু ভালবাসায়।আদরে আদরে সাজিয়ে তুলবো আমাদের ভালবাসার ঘরখানা।তুমি প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরবে,আমি অপেক্ষা করবো তোমার জন্য।তুমি এসেই আমাকে জড়িয়ে নেবে বুকে।তারপর কপালে ছোট্ট একটা চুমু একে দেবে।
আমি হেসে বললাম, তারপর?
নীলাম্বরী বলল,তারপর আমি তোমাকে খাবার এনে দিবো।তুমি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখবা খাবার রেডি
.jpg)
Tag: othersdiscusionlife storyall poemsharelove storylife storywapkiz codetutorial tag codetutorial tag code
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা জানাতে একদম ভুলবেন না !
মন্তব্য 0 টি আছে।
Need Login or Sing Up
কোন মন্তব্য নেই।