শয়তানের সাথে একরাত by smsudipbd
লেখক: SMsudipBD About 2020s ago |
ছোট বেলা থেকে সবাই আমাকে শয়তান ডাকে।কারণ আমার মাঝে একটি অদ্ভুত বিষয় আছে। আমি শয়তান দেখতে পাই, অনুভব করতে পারি।
আসল কথায় আসি...
একদিন বাসার সামনে আমি একটি শয়তান দেখতে পেলাম। আমার নিজের হাতের কাজ গুলো গুছিয়ে নিলাম খুব তাড়াতাড়ি। তারপর একটা বই হাতে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। পড়া শুরু করলাম, কিছুক্ষণ পড়ার পর দেখলাম শয়তানটা এক-পা দু-পা করে আমার রুমে প্রবেশ করল। রুমে এসেই এদিক সেদিক দু-একবার তাকিয়ে আস্তে করে আমার মাথার কাছে বসে পড়ল। আমি তাকে ভাল-মন্দ কিছুই বললাম না। আমি চুপচাপ আছি দেখে সেই আমার সাথে আলাপ জমাবার চেষ্টা করল। প্রথমে আমার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করল? তারপর বলল- কি কর?
আমি তার জবাবে বললাম– বই পড়ি। এই ভাবে কথা বলতে বলতে বেশ কিছু সময় কেটে গেল। এর মধ্যে দেখলাম শয়তান আমার মাথায় হাতবুলাতে শুরু করেছে। অতি অল্পক্ষণের মধ্যেই আমি একটু আরাম-আরাম অনুভব করলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই মাথাটা ভার হয়ে আসলে আমি বইটা বুকের উপর রেখে চোখ বুজে আরামটা পূর্ণাঙ্গ ভাবে অনুভব করতে থাকলাম। এর মধ্যেই দেখে শয়তান মাথা ছেড়ে শরীর টেপা শুরু করছে। আমিও বেশ অনুভব করলাম শরীর টেপা, মূহূর্তেই শরীরটা নিষ্ক্রিয় হয়ে এলে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারি নি।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখে– শয়তানটা তখনো আমার মাথার কাছে বসে আছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম– কিরে তুই এখনো যাস নি? শয়তান জবাবে বলল- আপনাকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য বসে আছি। আমি বললাম- কেন কিসের ধন্যবাদ? শয়তান বলল- আপনি আমার জীবন বাঁচিয়েছেন তাই। আমি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম আমি কিভাবে তোর জীবন বাচালাম? জবাবে শয়তান বলল- গতকাল সারা দিন আমি এখানে সেখানে ঘুরেছি, কিন্তু কোন খারাপ কাজ করতে পারি নাই। সারাদিন শেষে আমি আপনার কাছে আসলাম- দেখি আপনি বসে আছেন। আপনিই ছিলেন আমার শেষ টার্গেট। আপনার সাথে যদি আমি শয়তানি করতে না পারতাম তাহলে আমার মুনিব আমাকে ধ্বংস করে ফেলত আজ। কারণ পর পর তিন দিন আমি শয়তানি করতে ব্যার্থ হয়েছি। আর আমাদের নিয়ম হচ্ছে যদি কেউ পরপর তিন দিন শয়তানি কাজ করতে ব্যর্থ তাহলে তাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
কিছুক্ষণ থেমে শয়তান আবার বলা শুরু করল- যখন কোন আশাই দেখছিলাম না, এই মূহুর্তে আপনি কোন ভালকাজ করবেন ঠিক তখনই আপনি বই হাতে নিয়ে শুয়ে শুয়ে পড়া শুরু করলেন। জানেন তো– আপনারা যদি কোন ভাল কাজ না করেন তাহলে আমাদের কোন কাজ থাকে না। আর যদি কোন কাজও না করেন তাহলেও আমাদের কোন কাজ থাকে না। কারণ যে ব্যক্তি কোন কাজই করে না তার মাথা থেকে এমনিতেই শয়তানি উৎপাদন হতে থাকে, তাকে দিয়ে খারাপ কাজ করাতে আর আমাদের দরকার হয় না।
আমি একটু মাথা তুলে শয়তানের দিকে তাকালাম- সে আবার বলা শুরু করল- যখনই দেখলাম আপনি বই নিয়ে শুয়ে শুয়ে পড়ছেন তখনই আমি আপনার কছে গেলাম, প্রথমে আপনার মাথায় হাত বুলালাম, যখন দেখলাম আপনি একটু চোখ বুজেছেন ঠিক তখনই আপনার সারাশরীর টেপা শুরু করলাম। দেখলাম খুব দ্রুতই আপনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। জানেন তো মানুষ বই পড়লে জ্ঞানী হয়। তারা ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখে তারা খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে। তাই আমাদের শয়তানদের মাঝে সেই সবচেয়ে বড় শয়তান যে মানুষকে জ্ঞানাহোরণ থেকে বিরত রাখতে পারে। এই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ যে- আপনি আমাকে বড় শয়তানের উপাধি পেতে ও জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছেন।
আমি শয়তানের দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে তাকে বললাম আমারও যে কিছু কথা বলার আছে তোকে। শয়তান বলল বলেন শুনি কি কথা-
আমি তাকে বলতে শুরু করলাম- যখন রুমের বাইরে দেখলাম তোকে, তখন চিন্তা করছিলাম শয়তান কেন আমার রুমের সামনে? ওর তো শয়তানির উদ্দেশ্য ছাড়া এখানে থাকার কথা না। কিছুক্ষণ তোকে নিয়ে চিন্তা করলাম কি ভাবে তোকে কাজে লাগানো যায়। তখন একটা বুদ্ধি বের করলাম- তারই অংশ হিসেবে আমি বইটা হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। দেখলাম তুই রুমে ঢুকে আমার সাথে আলাপ জমিয়ে নিজের শয়তানি শুরু করে দিলি। আমি তোকে কিছু বলি নি করাণ আমি এমনিতেই ক্লান্ত ছিলাম তার উপর আবার মাথা ব্যাথা করছিল। আমি এমনিতেই শুয়ে পড়তাম তোকে দেখই বইটা হাতে নিয়েছিলাম মাত্র, কারণ আমি নিজেও জানতাম তোদের শয়তানদের মাথা নষ্ট হয়ে যায় যখন তোরা দেখিস কেউ পড়ছে। তাই আমি শুধু মাত্র তোকে ব্যবহার করে হাত-পা টিপিয়ে নিলাম।বই পড়া বা জ্ঞানাহোরণ কোন উদ্দেশ্য ছিল না, শুধু উদ্দেশ্য ছিল শরীর পেটানো।। এখন চলে যা আবার যদি কখনো দরকার হয়ে তখন আমাকে বলিস – তোকে উদ্ধার করে দিব।
মোড়াল: [ ঘুমের ঔষধ ছাড়ুন, ঘুমানোর আগে বই পড়ুন,বাকি কাজ শয়তান এর]
লেখক:- হাসিবুল ইসলাম ফাহাদ
Tag: othersdiscusionlife storyall poemsharelove storylife storywapkiz codetutorial tag codetutorial tag code
পোস্টটি কেমন লেগেছে তা জানাতে একদম ভুলবেন না !
মন্তব্য 0 টি আছে।
Need Login or Sing Up
কোন মন্তব্য নেই।